আলমগীর মাহমুদ :
নিয়তির নির্মমতায় পারিবারিক কিছু বাড়তি দায়িত্বের উত্তরাধিকারী হই। বাবা ছোট ভাই তিনমাসের ব্যবধানে ধরাধম ত্যাগ করে, না ফেরার দেশে বাসিন্দা বনে।
বাবার সংসার,ভাইয়ের সংসারের সবাই তাদের পরিবারের একমাত্র পূরুষ হিসেবে আমার দিকে তাঁকিয়েই কর্মে মনোবল যোগায়।নিজেরে নিজে বলে আমাদেরও একজন আপণজন আছে।আছে একজন গার্ডিয়ান। এই মনোভাবকে মনোবলে রূপ দিতে সঙ্গসাথী বনে জীবনবোধ র্চ্চায় ভেঙ্গে না পড়ার কর্মটি জিঁইয়ে যাই।চাকরী সাথে তাদের সঙ্গদেয়া,ভৌগলিক দূরত্ব সবমিলিয়ে ‘শ্যাম রাখি, না কূল রাখি অবস্থা।
চলমান এস,এস,সি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমান অভিভাবকদের দলে দাঁড়িয়ে।অচিন জনপদে কারো সাথে পরিচয় না থাকলে কে কি আলাপ করছে? কি করছে? এইসব দেখে দেখেই হয় কাটাতে।মধ্যে মধ্যে টং দোকানের এককাপ ‘চা’।আমারও চলছিল চিরন্তন এই আবহ।
আজ পরীক্ষা ছিল তথ্য প্রযুক্তি। পঁচিশ মিনিট। পঁচিশ মান।প্রশ্ন ও পঁচিশটি।সিষ্টেম এম,সি,কিউ।পরীক্ষা শেষ।হল থেকে বেরিয়ে এক ছাত্রী আমার পাশে দাঁড়ানো জনের কাছে আসতেই চোখের জলের নীরবধারা। কথায় আঁচ করি বাবা আর মেয়ে।
বাবা বিষ্ময়ে নিচু ভলিয়ুমে… কিরে কি হয়েছে? পারিস নে!
মেয়ে..দুইটা ভুল হয়েছে বাবা।
বাবা.. তাতে কি! যাহ হয়নি তাই নিয়ে ভাবছিস কেন? অতীত থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়,ভাবে না।অতীত ভাবলে মানুষ নিজের প্রতি আস্তা হারায়।হতাশ হয়।চিত্ত দূর্বল হয়ে পড়ে।আগামী নিয়ে ভাব।
প্রসঙ্গভ্রমে নিতে মেয়েকে বলছে চল..চল বলে গাড়ী মুখী করতেই মেয়ের ফিরতি জবাব.. আমার ক্লাশ রোল নং দুই।যাদের রোল ষাট সত্তরের কোটায়, স্যারকে কোনদিন যারা পারেনি পাঠ বুঝিয়ে দিতে। তারাই ফুল টু ফুল কারেট উত্তর লিখে হৈ হুলোড় করছে।আর যে সব আলাপ তাদের সাংকেতিক ভাষায় বিনিময় হচেছ। নিজেরে প্রবোধ দিতে পারছি না বাবা।
আমার ভাবনায় আঘাত করছে গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতেই ভর্তি। তারা যদি ভাল কলেজে চান্স পেয়ে যায় আমি হতে না পারি। আমার কি হবে? বলে মেয়েটি আবারও অশ্রুসজল অশ্রুসজল ভাব তখনই বাবার আবেদনময়ী শান্তনা বাণী “কান্দিস না ‘মা’!আমার কিছুই করার নাই! !
পাশে তাদের কথায় বেখেয়ালী ভাবে সব শুনছি আর অপেক্ষায় আছি.. আছি।আমার পরীক্ষাথী আসে মন খারাপ।..কিরে? বলতেই জানায় বন্ধুদের সাথে মিলিয়ে বুঝলাম আমার কারেট হয়েছে একুশটা। তাতে কি? যাহ হয়েছে তাতেই ‘আলহামদুলিল্লাহ ‘।ছেলেটা আমারে জ্ঞানগর্ভ দুইখান কথা কইল!
দু:খ ওখানে না। অন্যজায়গায়….
..যারা অন্ধ বেশী চোখে দেখছে তারা’।
..আলাউদ্দিনের আশ্চার্য প্রদীপও আজ তাদের হাতে’।
মনের সন্দেহ তাঁড়িয়ে আস্তার পরিবেশ যোগাতে কইলাম ”চুরি আর ধারের বিদ্যায় কেউ বড় হয় না,শেষ পর্যন্ত তোরাই জিতবী।”
লেখক:-বিভাগীয় প্রধান। সমাজবিজ্ঞান বিভাগ। উখিয়া কলেজ কক্সবাজার।
alamgir83cox@gmail.com
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।